ইংরেজীতে দেখতে নিচে ক্লিক করুন
কোর্ট অব ওয়ার্ডস আইন ১৮৭৯ এ ৯টি অংশ (চধৎঃ) এবং ৭০টি ধারা রয়েছে। এ আইনের প্রথম অংশে ১-৪ পর্যন- ৪টি ধারা আছে। ১ নং ধারায় আইনের শিরোনাম ও এখতিয়ার এবং ৩নং ধারায় আইনের ব্যাখ্যা (সংজ্ঞা) প্রদান করা হয়েছে। ২ এবং ৪নং ধারার বর্তমানে বিলুপ্তি ঘটেছে।
এই আইনের দ্বিতীয় অংশে ৫-২২ পর্যন- ১৮টি ধারা আছে। এ অংশে কোর্ট অব ওয়ার্ডস গঠন, এখতিয়ার এবং ক্ষমতাবলির বিবরণ রয়েছে। ৫নং ধারায় কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর গঠন, এখতিয়ার ও সাধারণ দায়িত্ব পালনের ক্ষমতার কথা বর্ণিত হয়েছে। ৬নং ধারায় কোন এস্টেট বা এস্টেটের মালিক নাবালক বা মহিলা হলে বা আদালত কর্তৃক দায়িত্ব পালনে শারীরিক ভাবে অক্ষম বা অযোগ্য ঘোষিত হলে, উক্ত এস্টেট বা এস্টেটের অংশ বিশেষ কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর আওতায় পরিচালনার জন্য গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
এই আইনের তৃতীয় অংশে ২৩-২৬ পর্যন- ৪টি ধারা রয়েছে। এ অংশে কতিপয় এস্টেটের সম্পত্তি বিক্রয়ের বিধি নিষেধের কথা বিবৃত হয়েছে।
এই আইনের চতুর্থ অংশে ২৭-৩৪ পর্যন- ৮টি ধারা সন্নিবেশিত আছে। এ সব ধারায় কোন এস্টেট, রাজ্য বা সম্পত্তি পরিচালনা অযোগ্যতা নির্ণয়ের বিধান সম্পর্কে বলা হয়েছে।
এই আইনের পঞ্চম অংশে ৩৫-৩৭ পর্যন- ৩টি ধারা রয়েছে। এই ধারাসমূহের কোন এস্টেট বা সম্পত্তির অযোগ্যতা নির্ণয়ের পর যে পদ্ধতি অনুসরণ বা ব্যবস’া গ্রহণ করতে হবে তার বিবরণ রয়েছে।
এই আইনের ষষ্ঠ অংশে ৩৮-৫০ পর্যন- ১৩টি ধারা রয়েছে। এ অংশে কোর্ট অব ওয়ার্ডস ভুক্ত এস্টেট বা সম্পত্তি ব্যবস’াপনা ও অভিভাবক নিয়োগ এবং তাদের দায়িত্ব বা ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে।
এই আইনের সপ্তম অংশে ৫১-৫৬ পর্যন- ৬টি ধারা রয়েছে। এ অংশে এই আইনের আওতায় মামলা রুজু ও পরিচালনার নিয়ম-কানুন ও ক্ষমতা বিবৃত হয়েছে।
এই আইনের অষ্টম অংশে ৫৭-৫৯ পর্যন- ৩টি ধারায় শাসি-র বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।
এই আইনের নবম অংশে বিবিধ বিষয়ে ৬০-৭০ পর্যন- ১১টি ধারা রয়েছে। এ অংশের ৬০ ধারায় কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর অক্ষমতা (উরংধনরষরঃরবং), ৬৩ (অ) ধারায় বকেয়া খাজনা ও সুদ আদায়ের পদ্ধতি, ৬৭ ধারায় আপিলের বিধান এবং ৭০ ধারায় বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কোর্ট অব ওয়ার্ডস আইনের ধারাসমূহের শিরোনাম এবং সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নরূপঃ-
দি কোর্ট অব ওয়ার্ডস এ্যাক্ট, ১৮৭৯
৫ ধারা : এই আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে সরকার কোর্ট অব ওয়ার্ডস বলে পরিগণিত।
৬ ধারা : উরংয়ঁধষরভরবফ চৎড়ঢ়বৎঃরবং ঘোষণার ৫টি কারণ বর্ণিত আছে।
৭ ধারা : উরংয়ঁধষরভরবফ চৎড়ঢ়বৎঃরবং এর উপর কোর্ট অব ওয়ার্ডসের এখতিয়ার।
৮ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস তার এখতিয়ার যখন পরিত্যাগ করে।
৯ ধারা : সম্পত্তি গ্রহণ ও নিজ আওতায় রক্ষণে কোর্ট অব ওয়ার্ডসের ক্ষমতা।
৯(এ) ধারা : কোন সম্পত্তির ব্যবস’াপনা থেকে কোর্ট অব ওয়ার্ডসের সরে আসার পদ্ধতি।
১০ ধারা : দেওয়ানী আদালতের আদেশে কোর্ট অব ওয়ার্ডস থেকে সম্পত্তি ব্যবস’াপনার ভার গ্রহণ।
১০(এ) ধারা : ঈৎবফরঃড়ৎং এর প্রতি নোটিশ।
১০(বি) ধারা : ঈৎবফরঃড়ৎং কর্তৃক সকল তথ্য ও দলিল প্রদানকরণ।
১০(সি) ধারা : এ আইনের ২৩ ধারার বিধান ব্যতীত অন্য কোন রাজস্ব কর্তপক্ষ কোর্ট অব ওয়ার্ডসের অধীনস’ জমি বিক্রয় করতে পারবে না।
১০(ডি) ধারা : দাবি নির্ধারণ।
১১ ধারা : উরংয়ঁধষরভরবফ চৎড়ঢ়বৎঃরবং হিসাবে রূপান-রিত যৌথ সম্পত্তি গ্রহণের নিয়ম।
১২ ধারা : উরংয়ঁধষরভরবফ চৎড়ঢ়বৎঃরবং পরিচালনা/ ব্যবস’াপনা থেকে কোর্ট অব ওয়ার্ডসের প্রত্যাহার।
১৩ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডসের ব্যবস’াপনায় থাকা সম্পত্তির ডধৎফং এর উত্তরাধিকার নির্ণয় পদ্ধতি ।
১৪ ধারা : সাধারণ ক্ষমতা।
১৫ ধারা : অন্যের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রয়োগ (বিভাগীয় কমিশনার/ কালেক্টর)।
১৬ ধারা : সংস’াপন ও অন্যান্য খরচ নির্বাহ।
১৮ ধারা : সম্পত্তি ব্যবস’াপনার ক্ষমতা।
১৯ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস তার দায়িত্বে আসা সম্পত্তি ভিন্ন ভিন্ন এস্টেট হিসেবে গঠন করতে পারেন।
২০ ধারা : এস্টেট পরিচালনায় ম্যানেজার ও তার অধ্যস-ন কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়োগ এবং অভিভাবক নিয়োগ।
২১ ধারা : নাবালক ডধৎফং এর জন্য লেখাপড়া, চিকিৎসা ও আবাসনের ব্যবস’া।
২২ ধারা : ডধৎফং ও তার পরিবারের জন্য ভাতা প্রদান।
২৩ ধারা : সম্পত্তি বিক্রয়ের রক্ষাকবচ।
২৪ ধারা : নাবালক ডধৎফং এর সম্পত্তি দেওয়ানী আদালতের অনুমতি ব্যতীরেকে বকেয়া রাজস্বের জন্য বিক্রয় করা যাবে না।
২৬ ধারা : ২৪ ধারা অনুযায়ী সম্পত্তি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কালেক্টর তার বকেয়া রাজস্ব, অন্যান্য সরকারি দাবি ও ব্যবস’াপনার খরচ গ্রহণ করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে।
২৭ ধারা : উরংয়ঁধষরভরবফ চৎড়ঢ়বৎঃরবং সম্পর্কে কালেক্টর কর্তৃক তদন- কোর্টের নিকট প্রতিবেদন প্রেরণ ও অযোগ্য ঘোষণা করার পদ্ধতি।
২৮ ধারা : প্রতিবেদন ছাড়াও কোর্টের অযোগ্য ঘোষণার ক্ষমতা।
২৯ ধারা : নাবালক উত্তরাধিকারীর সম্পত্তি কালেক্টরের জিম্মায় রাখা।
৩০ ধারা : নাবালক ডধৎফং কে কালেক্টরের সম্মুখে হাজির হওয়ার নির্দেশ।
৩১ ধারা : দেউলিয়া ঘোষিত প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালতের নিকট আবেদন।
৩২ ধারা : দেওয়ানি আদালত বিষয়টি আরও তদন- করতে পারেন।
৩৪ ধারা : খধহধপু অপঃ, ১৯১২ অনুসারে কোর্ট অব ওয়ার্ডসের তদন-চলাকালীন ক্ষমতা।
৩৫ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস কর্তৃক উরংয়ঁধষরভরবফ চৎড়ঢ়বৎঃরবং আয়ত্বে নেয়ার ঘোষণা।
৩৬ ধারা : আস’াবর সম্পত্তি কালেক্টরের আওতায় নেয়া।
৩৮ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডসের আয়ত্বাধীন কোন সম্পত্তি ব্যবস’াপনায় কোন ম্যানেজার না থাকলে কালেক্টর ম্যানেজারের দায়িত্ব পদাধিকার বলে পালন করবে।
৩৯ ধারা : ম্যানেজারের ক্ষমতা।
৪০ ধারা : ম্যানেজারের সাধারণ দায়িত্ব।
৪১ ধারা : সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব।
৪২ ধারা : অভিভাবকের সাধারণ দায়িত্ব।
৪৩ ধারা : অভিভাবকের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব।
৪৫ ধারা : কে হবে মহিলা ওয়ার্ডসের অভিভাবক।
৪৬ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডসের বকেয়া আদয়ের ক্ষমতা।
৪৭ ধারা : ম্যানেজার বা অভিভাবককে তার হিসাব ও সম্পত্তির বিবরণ উপস’াপন করার জন্য কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর নির্দেশ।
৪৮ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডসের নির্দেশ মোতাবেক সকল অর্থ গ্রহণ ও ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণে ম্যানেজারের দায়িত্ব।
৪৯ ধারা : ঝঁৎঢ়ষঁং সড়হবু ফরংঢ়ড়ংধষ করার ক্ষমতা কোর্ট অব ওয়ার্ডসের।
৫১ ধারা : ডধৎফং এর বিরুদ্ধে মামলায় ম্যানেজার বা কালেক্টরের দায়িত্ব বন্ধুর ন্যায়।
৫২ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস মামলার নিষ্পত্তির বিষয়ে অন্য কাউকে মনোনীত করতে পারে।
৫৩ ধারা : মামলার ব্যয় নির্বাহ হবে ম্যানেজার বা কালেক্টরের মাধ্যমে।
৫৪ ধারা : ওয়ার্ডস এর মামলায় সকল প্রসেস কালেক্টরের মাধ্যমে জারি হবে।
৫৫ ধারা : ওয়ার্ডস এর বিরুদ্ধে মামলা করতে কোর্ট অব ওয়ার্ডসকে জড়িত করতে হবে।
৫৭ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডসের ন্যায়সঙ্গত আদেশ অমান্যে দণ্ড।
৫৮ ধারা : কালেক্টর দণ্ড নির্বাহ করবে।
৫৯ ধারা : কোন কৃষক ন্যায় সঙ্গত পাওনা প্রদান না করলে দণ্ড।
৫৯(এ) ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস কর্তৃক নিয়োগকৃত ব্যক্তি সরকারি কর্মচারী হিসেবে গণ্য হবে।
৬০ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস ব্যতীত কোন ওয়ার্ডস নতুন কোন জমির কর ধার্য করতে পারবে না।
৬১ ধারা : সরকারের অনুমতি ব্যতীত কোন ওয়ার্ডস দত্তক নিতে পারবে না।
৬৩ ধারা : বকেয়া লীজ মানি বা করের সুদ ধার্য করতে পারবে।
৬৪ ধারা : ৫৭ বা ৫৮ ধারায় কোন দণ্ড প্রদান করা হলে তার একটা ঋড়ৎসধষ ৎবপড়ৎফ রাখতে হবে।
৬৫ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস থেকে কোন সম্পত্তি প্রত্যাহারের পদ্ধতি।
৬৬ ধারা : তদনে- কালেক্টরের জুডিশিয়াল ক্ষমতা।
৬৭ ধারা : কালেক্টরের উক্ত কার্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের নিকট আপিল করা যাবে।
৭০ ধারা : কোর্ট অব ওয়ার্ডস কর্র্র্তৃক বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা।
কোর্ট অব ওয়ার্ডস আইনটি ১৮৭৯ সালের ৩০ জুলাই হতে পরাধীন বংগ দেশে কার্যকর হয়। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর পূর্ব বঙ্গ ও আসাম নিয়ে গঠিত প্রদেশে ও এই আইন কার্যকর করা হয়েছিল। অতঃপর ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এই আইনটি পূর্ব পাকিস-ানে কার্যকর থাকে। এই আইনের ৫ ধারায় কোর্ট অব ওয়ার্ডস বলতে বোর্ড অব রেভিনিউকে বুঝাতো। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরও বোর্ড অব রেভিনিউ শব্দটি বহাল ছিল। তবে ১৯৭৩ সালের ১২ নং অধ্যাদেশ বলে বোর্ড অব রেভিনিউ এর পরিবর্তে গভর্ণমেন্ট শব্দটি প্রতিস’াপিত হয় এবং কোর্ট অব ওয়ার্ডস বলতে এখন সরকারকে বুঝায়। ১৯৮৯ সালে ভূমি সংস্কার বোর্ড আইন প্রবর্তনের ফলে ভূমি সংস্কার গঠিত হয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক নংভূঃমঃ/শা-১২-৩৯/৯০/২৫ তারিখ-১৪-০১-১৯৯২ এর আদেশ বলে এবং ২০০৫ সালের ভূমি সংস্কার বোর্ড বিধিমালার ৫(ঞ) বিধি বলে ভূমি সংস্কার বোর্ডকে কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর এস্টেট সমূহের ব্যবস’াপনা ও তদারকির দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বলা হয়েছে। বর্তমানে ভূমি সংস্কার বোর্ডই কোর্ট অব ওয়ার্ডসের দায়িত্ব পালন করছে।